ভুমিকাঃ- পৃথিবীর সকল প্রাণীর মধ্যে নানা রকমের চাহিদা রয়েছে। কোন না কোন অভাব বোধ থেকে প্রাণীর মধ্যে এই চাহিদাগুলি সৃষ্টি হয়ে থাকে। মনোবিদ...
ভুমিকাঃ- পৃথিবীর সকল প্রাণীর মধ্যে নানা রকমের চাহিদা রয়েছে। কোন না কোন অভাব বোধ থেকে প্রাণীর মধ্যে এই চাহিদাগুলি সৃষ্টি হয়ে থাকে।
মনোবিদরা সমগ্র মানবজীবনকে কয়েকটি স্তরে বিভক্ত করেছেন। এ প্রসঙ্গে মনোবিদ আর্ণেস্ট জোন্স এর নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়। তিনি মানবজীবনকে চারটি স্তরে বিভক্ত করেছেন। মানবজীবন বিকাশের এই সকল স্তরগুলিতে দৈহিক, মানসিক, প্রাক্ষোভিক, সামাজিক, নৈতিক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরণের বিকাশ ঘটে। এই সকল বিকাশকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের চাহিদা দেখা যায়।
বর্তমান শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ে প্রকল্প রুপায়নের ক্ষেত্রে “ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত যে কোন দুটি শ্রেণির বাল্য ও কৈশর এই দুই অবস্থার অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সকল প্রকার চাহিদার পর্যবেক্ষণ” গৃহিত হয়েছে।
প্রকল্পের বিষয়ঃ- সুতরাং আমাদের প্রকল্পের বিষয় গৃহিত হয়েছে - “ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত যে কোন দুটি শ্রেণির বাল্য ও কৈশর এই দুই অবস্থার অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সকল প্রকার চাহিদার পর্যবেক্ষণ”।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যঃ- আলোচ্য প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল -
১) বাল্য ও কৈশরের চাহিদাগুলি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করা।
২) শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী বাস্তব জীবনের উপযোগী শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা।
৩) সমাজ বাঞ্ছিত পথে শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার চাহিদা পূরণের সাহায্য করা।
৪) শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিসত্ত্বার পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়তা করা।
প্রকল্প রুপায়নের পরিকল্পনাঃ-
১) আলোচ্য প্রকল্পটি রুপায়নের জন্য শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকার নির্দেশ অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ও দশম শ্রেণির ১২ জন ছাত্র-ছাত্রীর (ষষ্ঠ শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং দশম শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের চাহিদা বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা স্থির করা হয়।
২) ষষ্ঠ শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ৩ জন ছাত্র এবং ৩ জন ছাত্রীর চাহিদা সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
৩) দশম শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ৩ জন ছাত্র এবং ৩ জন ছাত্রীর চাহিদা সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
৪) প্রকল্পের কাজটি সার্বিকভাবে সফল করার জন্য কী কী তথ্য সংগ্রহ করা হবে তার একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয় এবং সেটি অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়।
৫) আগের পরিকল্পনাগুলি অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ সম্পূর্ণ হলে, সেই সকল তথ্য বিশ্লেষণ করে ছাত্র-ছাত্রীদের বাল্য ও কৈশরকালীন চাহিদা বিষয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। সবশেষে তা শিক্ষক/শিক্ষিকার স্বাক্ষরের জন্য জমা দেওয়া হবে।
তথ্য সংগ্রহঃ-
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আলোচ্য প্রকল্পটি রুপায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বাল্য স্তরের অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণির ৩ জন ছেলে ও ৩ জন মেয়ে, মোট ৬ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি সরবরাহ করা হয়েছে।
কৈশর স্তরের অর্থাৎ দশম শ্রেণির ৩ জন ছেলে ও ৩ জন মেয়ে, মোট ৬ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি সরবরাহ করা হয়েছে।
তথ্য বিশ্লেষণঃ- (1) ১ নং তালিকায় বাল্য স্তরের অন্তর্গত ষষ্ঠ শ্রেণির ৬ জন শিক্ষার্থীকে তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন বালক এবং ৩ জন বালিকা রয়েছে। এদের দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক চাহিদা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ২ নং তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
(2) ২ নং তালিকায় উল্লেখিত তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে বাল্য স্তরের বেশীরভাগ শিক্ষার্থীর নিম্নলিখিত চাহিদাগুলি দেখা যায়। যেমন - ১) দৈহিক চাহিদা – খাদ্যের চাহিদা, খেলাধুলার চাহিদা, সক্রিয়তার চাহিদা ইত্যাদি, ২) মানসিক চাহিদা – নিরাপত্তার চাহিদা, অনুকরণের চাহিদা, কৌতূহলের চাহিদা ইত্যাদি, ৩) সামাজিক চাহিদা – সহযোগিতার চাহিদা, দলগঠনের চাহিদা, নিয়ম কানুন মেনে চলার চাহিদা, শ্রদ্ধা বোধের চাহিদা ইত্যাদি।
(3) ৩ নং তালিকায় কৈশর স্তরের অন্তর্গত দশম শ্রেণির ৬ জন শিক্ষার্থীকে তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন কিশোর এবং ৩ জন কিশোরী রয়েছে। এদের দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক চাহিদা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ৪ নং তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
(4) ৪ নং তালিকায় উল্লেখিত তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে কৈশর স্তরের বেশীরভাগ শিক্ষার্থীর নিম্নলিখিত চাহিদাগুলি দেখা যায়। যেমন- i) দৈহিক চাহিদা – ভালো ভালো খাদ্যের চাহিদা, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধের চাহিদা, দেহকে আকর্ষণীয় ও সুন্দর করে তোলার চাহিদা, সক্রিয়তার চাহিদা ইত্যাদি। ii) মানসিক চাহিদা – নিরাপত্তার চাহিদা, জ্ঞান অর্জনের চাহিদা, কৌতূহলের চাহিদা, আত্মপ্রকাশের চাহিদা, স্বাধীনভাবে চলাফেরার চাহিদা, নেতৃত্ব দানের চাহিদা ইত্যাদি। iii) সামাজিক চাহিদা – সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের চাহিদা, শ্রদ্ধা বোধের চাহিদা, অন্যায়ের প্রতি প্রতিবাদের চাহিদা, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার চাহিদা, প্রতিযোগিতার চাহিদা, জীবনাদর্শের চাহিদা ইত্যাদি।
সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ- প্রকল্পের উদ্দেশ্যে সংগৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণের পরিপক্ষিতে যে সকল সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে সেগুলি হল –
১) শিশু বা শিক্ষার্থীর বয়স পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তদের মধ্যে চাহিদার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, যার উপর ভিত্তি করে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।
২) ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে চাহিদার বিশেষ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। তাই ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শিক্ষা ব্যবস্থার কোন প্রয়োজন নেই।
৩) ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্থাৎ বাল্যকালের ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে যে ধরণের চাহিদা থাকে, দশম শ্রেণির অর্থাৎ কৈশরকালের ছেলে মেয়েদের মধ্যে তার অনেকখানি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
৪) বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদাগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা উচিত, যা শিক্ষা-শিখন প্রক্রিয়াকে আরও সুগঠিত করে তুলতে সাহায্য করবে।
সীমাবদ্ধতাঃ- এই প্রকল্পটি রুপায়িত করতে গিয়ে যে সমস্যা বা অসুবিধাগুলির সম্মুখীন হতে হয়েছে, সেগুলি হল-
১) ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক ক্ষেত্রে তাদের চাহিদাগুলি গোপন করেছে।
২) ছাত্র-ছাত্রীদের সকল চাহিদা বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করা যায় না।
সহায়ক গ্রন্থপুঞ্জিঃ- আলোচ্য প্রকল্পটি রুপায়নের জন্য যে সকল গ্রন্থপুঞ্জির সাহায্য নেওয়া হয়েছে, সেগুলি হল-
১) ঘোড়াই নিমাই চাঁদ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান, এ.বি.এস. পাবলিশিং হাউস, কলিকাতা।
২) রায় সুশীল, আধুনিক শিক্ষার পটভূমি, সোমা বুক এজেন্সি, কলিকাতা।
৩) ডঃ পাল দেবাশিস এবং ডঃ সাহু সুশান্ত কুমার, প্রশ্নোত্তরে শিক্ষাবিজ্ঞান, ছায়া প্রকাশনী, কলিকাতা।
৪) ডঃ রায় সুভাষ চন্দ্র, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান, সাঁতরা পাবলিকেশন প্রাঃ লিঃ, কলিকাতা।
বর্তমান শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ে প্রকল্প রুপায়নের ক্ষেত্রে “ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত যে কোন দুটি শ্রেণির বাল্য ও কৈশর এই দুই অবস্থার অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সকল প্রকার চাহিদার পর্যবেক্ষণ” গৃহিত হয়েছে।
প্রকল্পের বিষয়ঃ- সুতরাং আমাদের প্রকল্পের বিষয় গৃহিত হয়েছে - “ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত যে কোন দুটি শ্রেণির বাল্য ও কৈশর এই দুই অবস্থার অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সকল প্রকার চাহিদার পর্যবেক্ষণ”।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যঃ- আলোচ্য প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল -
১) বাল্য ও কৈশরের চাহিদাগুলি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করা।
২) শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী বাস্তব জীবনের উপযোগী শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা।
৩) সমাজ বাঞ্ছিত পথে শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার চাহিদা পূরণের সাহায্য করা।
৪) শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিসত্ত্বার পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়তা করা।
প্রকল্প রুপায়নের পরিকল্পনাঃ-
১) আলোচ্য প্রকল্পটি রুপায়নের জন্য শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকার নির্দেশ অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ও দশম শ্রেণির ১২ জন ছাত্র-ছাত্রীর (ষষ্ঠ শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং দশম শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের চাহিদা বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা স্থির করা হয়।
২) ষষ্ঠ শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ৩ জন ছাত্র এবং ৩ জন ছাত্রীর চাহিদা সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
৩) দশম শ্রেণির ৬ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ৩ জন ছাত্র এবং ৩ জন ছাত্রীর চাহিদা সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
৪) প্রকল্পের কাজটি সার্বিকভাবে সফল করার জন্য কী কী তথ্য সংগ্রহ করা হবে তার একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয় এবং সেটি অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়।
৫) আগের পরিকল্পনাগুলি অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ সম্পূর্ণ হলে, সেই সকল তথ্য বিশ্লেষণ করে ছাত্র-ছাত্রীদের বাল্য ও কৈশরকালীন চাহিদা বিষয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। সবশেষে তা শিক্ষক/শিক্ষিকার স্বাক্ষরের জন্য জমা দেওয়া হবে।
তথ্য সংগ্রহঃ-
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আলোচ্য প্রকল্পটি রুপায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বাল্য স্তরের অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণির ৩ জন ছেলে ও ৩ জন মেয়ে, মোট ৬ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি সরবরাহ করা হয়েছে।
তালিকা - ১
ক্রমিক নম্বর | ছাত্র/ছাত্রীর নাম | লিঙ্গ | বয়স |
---|---|---|---|
1 | আমিনুদ্দিন খান | বালক | ১১ বছর ৫ মাস |
2 | অরিত্র পাল | বালক | ১১ বছর ৬ মাস |
3 | নুরনেশা খাতুন | বালিকা | ১১ বছর ৪ মাস |
4 | বিলকিস বানো | বালিকা | ১১ বছর ৬ মাস |
5 | অতনু জানা | বালক | ১১ বছর ৭ মাস |
6 | সামিদা খাতুন | বালিকা | ১১ বছর ৬ মাস |
তালিকা - ২
ক্রমিক নম্বর | ছাত্র/ছাত্রীর নাম | চাহিদা | ||
---|---|---|---|---|
দৈহিক চাহিদা | সামাজিক চাহিদা | মানসিক চাহিদা | ||
1 | আমিনুদ্দিন খান | খাদ্যের চাহিদা ও খেলার চাহিদা প্রবল | বয়স্কদের কাছ থেকে নিরাপত্তা চায়, অনুকরণ প্রিয় ও কৌতুহলী | বাড়ির নিয়ম ভঙ্গ করে মাঝে মাঝে, সহযোগিতার আগ্রহ দেখা যায় |
2 | অরিত্র পাল | সক্রিয়তার চাহিদা, খেলার চাহিদা ও খাদ্যের চাহিদা প্রবল। | সকলের কাছে নিরাপত্তা আশা করে, অনুকরণ প্রিয়, কৌতূহলী ও দায়িত্ববান। | সহযোগিতার আগ্রহ দেখা যায়, নিয়ম কানুন মেনে চলে, দল গঠনের প্রবণতা রয়েছে। |
3 | নুরনেশা খাতুন | খাদ্যের প্রতি অনিহা, অলস ভাব, খুব সক্রিয় নয় | কৌতূহলী, দায়িত্ববান, বিশ্লেষণী ক্ষমতা অনেক বেশী | বিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে চলতে চায়, সহযোগী, শ্রদ্ধাপ্রবণ, বন্ধুত্ব করতে ভালবাসে |
4 | বিলকিস বানো | খেলার চাহিদা, খাদ্যের চাহিদা প্রবল ও অতি সক্রিয় | পড়াশোনায় আগ্রহি, কৌতূহলী, অনুকরণ প্রিয়, সকলের কাছ থেকে নিরাপত্তা চায় | সহযোগী, বন্ধুত্বপূর্ণ ভাব, শ্রদ্ধাপ্রবণ, শৃঙ্খলা পরায়ণ |
5 | অতনু জানা | খেলার চাহিদা, সক্রিয়তার চাহিদা ও খাদ্যের চাহিদা প্রবল | অনুকরণ প্রিয়, কৌতূহলী, সাহসী, সকলের কাছ থেকে নিরাপত্তা আশা করে | সহযোগী, শৃঙ্খলা পরায়ণ, শ্রদ্ধাবান, সকলের সঙ্গে মিশতে ভালবাসে |
6 | সামিদা খাতুন | খাদ্যের প্রতি অনিহা, খেলাধুলার চাহিদা ও সক্রিয়তার চাহিদা প্রবল | অনুসন্ধানের চাহিদা আছে, কৌতূহলী, নিরাপত্তা চায় | সহযোগী, দলের নিয়ম মেনে চলে, বন্ধুত্ব করতে ভালবাসে, শ্রদ্ধাপ্রবণ |
কৈশর স্তরের অর্থাৎ দশম শ্রেণির ৩ জন ছেলে ও ৩ জন মেয়ে, মোট ৬ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি সরবরাহ করা হয়েছে।
তালিকা - ৩
ক্রমিক নম্বর | ছাত্র/ছাত্রীর নাম | লিঙ্গ | বয়স |
---|---|---|---|
1 | সেক জাহাঙ্গীর | কিশোর | ১৫ বছর ৫ মাস |
2 | টুম্পা খাতুন | কিশোরী | ১৫ বছর ৬ মাস |
3 | সায়ন দাস | কিশোর | ১৫ বছর ৪ মাস |
4 | সোমা খাতুন | কিশোরী | ১৫ বছর ৬ মাস |
5 | মৌমিতা মন্ডল | কিশোর | ১৫ বছর ৭ মাস |
6 | দেবজিত সেন | কিশোর | ১৫ বছর ৬ মাস |
তালিকা - ৪
ক্রমিক নম্বর | ছাত্র/ছাত্রীর নাম | চাহিদা | ||
---|---|---|---|---|
দৈহিক চাহিদা | সামাজিক চাহিদা | মানসিক চাহিদা | ||
1 | সেক জাহাঙ্গীর | ভালো ভালো খাদ্যের চাহিদা, সমবয়সী ছেলে মেয়েদের সঙ্গে মেলামেশা পছন্দ করে, দেহকে আকর্ষণীয় ও সুন্দর করতে চায় | নিরাপত্তার অভাব বোধ করে, কৌতূহল প্রবণ, জ্ঞান অর্জনের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ আছে | সমাজসেবা মূলক কাজে অংশগ্রহণ করে, বড়দের শ্রদ্ধা করে, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করে |
2 | টুম্পা খাতুন | খাদ্যের চাহিদা মোটামুটি, নিজের বান্ধবিদের সঙ্গে থাকতে বেশী পছন্দ করে | আত্মপ্রকাশের প্রবণতা রয়েছে, গোয়েন্দা বই পড়তে পছন্দ করে, রূপচর্চা করতে পছন্দ করে | বড়দের শ্রদ্ধা করে, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চায়, প্রতিযোগিতার মানসিকতা প্রবল |
3 | সায়ন দাস | খাদ্যের চাহিদা স্বাভাবিক, সবসময় সক্রিয় থাকতে চায়, সমবয়সী ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে ও গল্প করতে পছন্দ করে | রোমান্টিক গল্পের বই পড়তে পছন্দ করে, শারীর চর্চা বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পছন্দ করে | সমাজসেবা মূলক কাজে অংশ গ্রহণ করে, ভবিষ্যতে আদর্শ নাগরিক হতে চায়, বড়দের শ্রদ্ধা করে |
4 | সোমা খাতুন | দেহকে সুন্দর রাখতে চায়, সমবয়সী ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করে, ভালো ভালো খাদ্যের চাহিদা প্রবল | নিরাপত্তার অভাব বোধ করে, নেতৃত্ব দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, কৌতূহল প্রবণ, গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে | বড়দের শ্রদ্ধা করে, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চায়, সমাজসেবা মূলক কাজে অংশ গ্রহণ করে |
5 | মৌমিতা মন্ডল | খাদ্যের চাহিদা প্রবল, দেহকে সুন্দর রাখতে চায়, সমবয়সী ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে ভালবাসে | রোমান্টিক গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে, আত্মপ্রকাশের প্রবণতা রয়েছে, রূপচর্চা করতে পছন্দ করে | সমাজসেবা মূলক কাজে অংশ গ্রহণ করে, বড়দের শ্রদ্ধা করে, প্রতিযোগিতার মানসিকতা প্রবল |
6 | দেবজিত সেন | খাদ্যের চাহিদা বিশেষ দেখা যায় না, মেয়েদের এড়িয়ে চলে | জ্ঞান অর্জনের চাহিদা বিশেষ, গোয়েন্দা বই পড়তে ভালোবাসে, আত্মপ্রকাশের চাহিদা রয়েছে, কৌতূহল প্রবণ | অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করে, সমাজসেবা মূলক কাজে অংশ গ্রহণ করে, বড়দের শ্রদ্ধা করে |
তথ্য বিশ্লেষণঃ- (1) ১ নং তালিকায় বাল্য স্তরের অন্তর্গত ষষ্ঠ শ্রেণির ৬ জন শিক্ষার্থীকে তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন বালক এবং ৩ জন বালিকা রয়েছে। এদের দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক চাহিদা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ২ নং তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
(2) ২ নং তালিকায় উল্লেখিত তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে বাল্য স্তরের বেশীরভাগ শিক্ষার্থীর নিম্নলিখিত চাহিদাগুলি দেখা যায়। যেমন - ১) দৈহিক চাহিদা – খাদ্যের চাহিদা, খেলাধুলার চাহিদা, সক্রিয়তার চাহিদা ইত্যাদি, ২) মানসিক চাহিদা – নিরাপত্তার চাহিদা, অনুকরণের চাহিদা, কৌতূহলের চাহিদা ইত্যাদি, ৩) সামাজিক চাহিদা – সহযোগিতার চাহিদা, দলগঠনের চাহিদা, নিয়ম কানুন মেনে চলার চাহিদা, শ্রদ্ধা বোধের চাহিদা ইত্যাদি।
(3) ৩ নং তালিকায় কৈশর স্তরের অন্তর্গত দশম শ্রেণির ৬ জন শিক্ষার্থীকে তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন কিশোর এবং ৩ জন কিশোরী রয়েছে। এদের দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক চাহিদা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ৪ নং তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
(4) ৪ নং তালিকায় উল্লেখিত তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে কৈশর স্তরের বেশীরভাগ শিক্ষার্থীর নিম্নলিখিত চাহিদাগুলি দেখা যায়। যেমন- i) দৈহিক চাহিদা – ভালো ভালো খাদ্যের চাহিদা, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধের চাহিদা, দেহকে আকর্ষণীয় ও সুন্দর করে তোলার চাহিদা, সক্রিয়তার চাহিদা ইত্যাদি। ii) মানসিক চাহিদা – নিরাপত্তার চাহিদা, জ্ঞান অর্জনের চাহিদা, কৌতূহলের চাহিদা, আত্মপ্রকাশের চাহিদা, স্বাধীনভাবে চলাফেরার চাহিদা, নেতৃত্ব দানের চাহিদা ইত্যাদি। iii) সামাজিক চাহিদা – সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের চাহিদা, শ্রদ্ধা বোধের চাহিদা, অন্যায়ের প্রতি প্রতিবাদের চাহিদা, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার চাহিদা, প্রতিযোগিতার চাহিদা, জীবনাদর্শের চাহিদা ইত্যাদি।
সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ- প্রকল্পের উদ্দেশ্যে সংগৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণের পরিপক্ষিতে যে সকল সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে সেগুলি হল –
১) শিশু বা শিক্ষার্থীর বয়স পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তদের মধ্যে চাহিদার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, যার উপর ভিত্তি করে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।
২) ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে চাহিদার বিশেষ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। তাই ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শিক্ষা ব্যবস্থার কোন প্রয়োজন নেই।
৩) ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্থাৎ বাল্যকালের ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে যে ধরণের চাহিদা থাকে, দশম শ্রেণির অর্থাৎ কৈশরকালের ছেলে মেয়েদের মধ্যে তার অনেকখানি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
৪) বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদাগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা উচিত, যা শিক্ষা-শিখন প্রক্রিয়াকে আরও সুগঠিত করে তুলতে সাহায্য করবে।
সীমাবদ্ধতাঃ- এই প্রকল্পটি রুপায়িত করতে গিয়ে যে সমস্যা বা অসুবিধাগুলির সম্মুখীন হতে হয়েছে, সেগুলি হল-
১) ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক ক্ষেত্রে তাদের চাহিদাগুলি গোপন করেছে।
২) ছাত্র-ছাত্রীদের সকল চাহিদা বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করা যায় না।
সহায়ক গ্রন্থপুঞ্জিঃ- আলোচ্য প্রকল্পটি রুপায়নের জন্য যে সকল গ্রন্থপুঞ্জির সাহায্য নেওয়া হয়েছে, সেগুলি হল-
১) ঘোড়াই নিমাই চাঁদ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান, এ.বি.এস. পাবলিশিং হাউস, কলিকাতা।
২) রায় সুশীল, আধুনিক শিক্ষার পটভূমি, সোমা বুক এজেন্সি, কলিকাতা।
৩) ডঃ পাল দেবাশিস এবং ডঃ সাহু সুশান্ত কুমার, প্রশ্নোত্তরে শিক্ষাবিজ্ঞান, ছায়া প্রকাশনী, কলিকাতা।
৪) ডঃ রায় সুভাষ চন্দ্র, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান, সাঁতরা পাবলিকেশন প্রাঃ লিঃ, কলিকাতা।
COMMENTS